অনলাইন ডেস্ক
মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা চলমান লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো ও আরো কড়া বিধিনিয়মের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন৷ করোনা সংক্রমণের হার কমলেও দুশ্চিন্তা দূর হচ্ছে না৷
করোনা সংকটের ক্ষেত্রে মূলত দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বাড়লে সরকার কড়া পদক্ষেপ নিয়ে থাকে৷ সেই হার কমে গেলে আবার কড়াকড়ি কিছুটা শিথিল করা হয়৷ জার্মানিতেও গত বছরের মার্চ মাস থেকে এমনটা চলে এসেছে৷ বড়দিন ও নববর্ষ উৎসবের সময় সংক্রমণের হার বাড়ার আশঙ্কায় বর্তমান লকডাউনের মেয়াদ আরো বাড়ানো হয়েছিল৷ কিন্তু সেই আশঙ্কা ভুল প্রমাণ করে বাস্তবে সংক্রমণের হার বাড়ার বদলে কমে চলেছে৷ সোমবার নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ‘মাত্র’ ৭,১৪১ জন৷ অবশ্য কম পরীক্ষার কারণে সপ্তাহান্তের পরিসংখ্যান বাকি দিনের তুলনায় কমে যায়৷ সংক্রমণের হার কমা সত্ত্বেও মঙ্গলবার জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা সম্ভবত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়াতে চলেছেন৷ সেইসঙ্গে লকডাউনের বিধিনিয়ম আরো কড়া করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তারা৷
Chancellor Angela Merkel and state leaders are likely to meet earlier than planned to discuss whether tougher Covid measures are needed in Germany due to worries over new virus variants. Here's what we know so far. https://t.co/Gks8R4TD7c
— The Local Germany (@TheLocalGermany) January 15, 2021
জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য স্তরে কর্তৃপক্ষ দোটানায় রয়েছে৷ লকডাউন সত্ত্বেও সংক্রমণের হার যথেষ্ট মাত্রায় কমছে না৷ ব্রিটেন ও দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আসা করোনা ভাইরাসের ‘মিউটেটেড’ সংস্করণ এমন প্রবণতার জন্য কতটা দায়ী, তাও স্পষ্ট নয়৷ জার্মানিতে অনেক বেশি ছোঁয়াচে এই দুই সংস্করণের অস্তিত্ব আগেই পাওয়া গেছে৷ এমন অবস্থায় কোনো ঝুঁকি না নিয়ে সরকার লকডাউনের মেয়াদ ও বিধিনিয়ম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে৷ বিশেষ করে ব্রিটেনের মতে দেশের করুণ পরিস্থিতি থেকে শিক্ষা নিয়ে কড়াকড়ি শিথিল করার বিষয়ে ভাবছে না কর্তৃপক্ষ৷
Germany plans to tighten controls on people entering the country as part of efforts to bring under control a surge in coronavirus cases which is leading to record numbers of deaths in the European Union's most populous country. https://t.co/gMR14WghrG
— Reuters Health (@Reuters_Health) January 12, 2021
জার্মানিতে করোনা পরিস্থিতির অবনতির জন্য টিকাকরণ কর্মসূচির ধীর গতিকেও সমালোচকরা দায়ী করছেন৷ এখনো পর্যন্ত প্রায় দশ লাখ মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন৷ শুরুতে কিছু সমস্যার পর ধীরে ধীরে আরো বেশি মানুষ টিকা নেবার সুযোগ পাবেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এমন আশ্বাস দিলেও আপাতত তার কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না৷
এরই মধ্যে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস একটি প্রস্তাব তুলে ধরে বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন৷ তার মতে, যারা টিকা পাচ্ছেন, তাদের রেস্তোরাঁ বা সিনেমা হলের মতো জায়গায় যাবার অনুমতি দেওয়া উচিত, কারণ, টিকা পাবার পর মানুষ বাকিদের কতটা সংক্রমিত করতে পারে, সে বিষয়ে চূড়ান্ত প্রমাণ নেই৷ কমপক্ষে তারা হাসপাতালের আইসিইউ দখল করবেন না, বলেন মাস৷ উল্লেখ্য, জার্মান মন্ত্রিসভার বাকি সদস্যরা শুরু থেকেই এমন প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করে এসেছেন৷ বিধিনিয়মের ক্ষেত্রে তারা কোনো রকম বৈষম্যের বিপক্ষে৷ আইন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় আবার এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে৷
advertisement
কোভিড ১৯ সংক্রমণের হার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আপাতত কয়েকটি নতুন পদক্ষেপের বিষয়ে ঐকমত্য অর্জনের চেষ্টা চলছে৷ যেমন সাধারণ মাস্কের বদলে প্রকাশ্যে এফএফপিটু মাস্ক বাধ্যতামূলক করা হতে পারে৷ সে ক্ষেত্রে ট্রাম-বাস-ট্রেন ও দোকানবাজারে সবাইকে এমন মাস্ক পরতে হবে৷ এমন মাস্কের কার্যকারিতা সম্পর্কে বিশেষজ্ঞদের মনে সন্দেহ না থাকলেও মনে করিয়ে দিচ্ছেন যে, সেটি ঠিকমতো না পরতে পারলে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না৷ সরকার আরো বেশি মানুষকে দফতরের বদলে বাসায় ‘হোম অফিস’ সম্ভব করতে কর্মদাতাদের উপর চাপ বাড়ানোর কথাও ভাবছে৷ মানুষের মধ্যে যোগাযোগ কমাতে গণপরিবহণ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার প্রস্তাব নাকচ করে দিচ্ছেন বেশিরভাগ রাজনীতিক৷
এসবি/এসিবি (ডিপিএ, রয়টার্স)