অনলাইন ডেস্ক
সহজ বাংলায় বললে এই ভাইরাস মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় খলনায়ক। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারিভাবে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের আয়োজন করেছিলেন হোয়াইট হাউসে।
করোনা ভাইরাসে মৃত মানুষের সংখ্যা পাঁচ লাখের বেশি। বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ আমেরিকায় সবচেয়ে বড় আঘাত এই পরিসংখ্যান। জর্জ ওয়াশিংটন, আব্রাহাম লিঙ্কনদের দেশ এর আগে অনেক কঠিন সময়ে দেখেছে। দুটো বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে, ভিয়েতনাম যুদ্ধ দেখেছে, সাক্ষী থেকেছে জঙ্গি হামলার। কিন্তু এত বড় ট্র্যাজেডির সাক্ষী থাকা হয়নি। সহজ বাংলায় বললে এই ভাইরাস মার্কিন ইতিহাসের সবচেয়ে বড় খলনায়ক। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সরকারিভাবে মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের আয়োজন করেছিলেন হোয়াইট হাউসে।
ঘড়িতে ৬ বেজে ১৫ মিনিট। সবে দিন ফুরিয়ে সন্ধ্যা নেমেছে আমেরিকার আকাশে। পাঁচ শত মোমবাতির আলোয় এবং অর্ধনমিত জাতীয় পতাকাকে সাক্ষী রেখে করোনায় মৃতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রেসিডেন্ট। প্রথমে নীরবতা পালন করা হল। তারপর বক্তব্য রাখলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পেছনে তখন বেজে চলেছে সেনা ব্যান্ডের ‘আমেজিং গ্রেস’ নামক করুণ সুর। বাইডেন জানালেন ভাইরাসে যত মানুষ মারা গিয়েছেন এত সংখ্যক মানুষ দুটো বিশ্বযুদ্ধ এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধ মিলিয়েও মারা যাননি। সংখ্যাটা অবিশ্বাস্য।
তিনি নিশ্চিত প্রতিটি সংখ্যা এক একটা পরিবারের কথা বলে। যাঁরা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাঁদের কষ্ট কোনও কিছুতেই কমার নয়। কিন্তু দেশ পাশে রয়েছে, এটা ভেবে কিছুটা শান্তি পেতে পারেন তাঁরা। মৃতদের কে ডেমোক্র্যাট, কে রিপাবলিক সেটা বড় কথা নয়। সকলেই আমেরিকান। তাই এটা গোটা দেশবাসীর কাছে দুঃখের পরিসংখ্যান। এমনিতেই প্রবল তুষার ঝড় এবং ঠান্ডায় গত এক সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি নাগালের বাইরে পৌঁছেছে টেক্সাসে। জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট। তিনি বার্তা দিয়েছেন কঠিন পরিস্থিতির বিরুদ্ধে একজোট হয়ে লড়াই করার।
কথা দিয়েছিলেন তিনি সকলের প্রেসিডেন্ট হবেন। কাজের ক্ষেত্রে রং বিচার করবেন না। দায়িত্ব নিয়েই ভাইরাস সামলানোর জন্য আলাদা টাস্কফোর্স গঠন করেছিলেন তিনি। আসলে প্রিয়জন হারানোর যন্ত্রণা তাঁর থেকে ভাল কে বুঝবে? প্রথম স্ত্রী এবং কন্যাকে হারিয়েছিলেন পথ দুর্ঘটনায়। পরে ব্রেইন ক্যান্সারে মারা যান ছেলে। কিন্তু থেমে থাকেননি বাইডেন। তিনি চান আমেরিকাও যেন থেমে না থাকে। চলাই জীবন, থেমে যাওয়াই মরণ। এই মন্ত্রে দীক্ষিত তিনি। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী চেয়ারের মালিক হওয়ার পাশাপাশি, সবচেয়ে পুরনো গণতন্ত্রের পূজারী তিনি। মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বার্তা কঠিন সময় মার্কিনিদের মানসিক শক্তি জোগাবে সেটাই স্বাভাবিক।