প্রতিশোধ, হারানো সম্মান ফিরিয়ে আনা, অপমানের বদলা নেওয়া। আর কীভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে এই ম্যাচকে ? আজ থেকে ২৫ বছর আগে এই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে জার্মানির কাছে হারতে হয়েছিল ইংল্যান্ডকে। বর্তমান ইংলিশ কোচ সাউথগেট সেদিন পেনাল্টি মিস করেছিলেন। তারপর নকআউট পর্বে যখনই দেখা হয়েছে ইংল্যান্ড এবং জার্মানির প্রতিবারই বাজিমাত করেছে জার্মান জায়ান্টরা। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের চিরকালীন লড়াইয়ে ইতিহাস অনেকটা জার্মানির পক্ষে ছিল।
MATCH REPORT: Sterling and Kane send Three Lions through against Germany…
🤔 Did you predict that?#EURO2020
— UEFA EURO 2020 (@EURO2020) June 29, 2021
এই ম্যাচের আগে জার্মানি যথেষ্ট ভাল ফুটবল খেলছিল। পর্তুগালকে হারানো ছাড়া ফ্রান্সের কাছে হেরেছিল ঠিকই, কিন্তু হাঙ্গেরির কাছে পিছিয়ে পড়েও যেভাবে কামব্যাক করেছিল জার্মানরা, তাতে আবার স্বপ্ন দেখা শুরু করেছিলেন তাঁদের সমর্থকরা। কিন্তু এই ম্যাচে ইতিহাস বদল এর ডাক দিয়েছিলেন ইংলিশ কোচ গ্যারেথ সাউথ গেট। নিজের ব্যর্থতা তার ছাত্ররা ভুলিয়ে দিক চেয়েছিলেন তিনি। খেলা শুরু হওয়ার পর সেটাই বোঝা যাচ্ছিল।
শুরু থেকেই এদিন যেন অন্যরকম মোটিভেশন নিয়ে নেমেছিল ইংরেজরা। ৩-৪-৩ ফরমেশনে খেলা শুরু করেছিল লুক শ, সাকা, কেনরা। প্রথমার্ধেই রহিম স্টারলিং দুর্দান্ত শট নিয়েছিলেন। জার্মান গোলরক্ষক নয়ার শরীর ছুঁড়ে বাঁচিয়ে দেন। প্রথমার্ধেই সহজ সুযোগ পেয়ে মিস করেন হ্যারি কেন। প্রথমার্ধেই জার্মানির ওয়ার্নার সহজ সুযোগ পেয়েছিলেন। কিন্তু দুর্দান্ত সেভ করেন ইংলিশ গোলরক্ষক পিকফোর্ড।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জার্মানির কাই হাভাটজ দুর্দান্ত ভলি মারেন। ইংলিশ গোলরক্ষক বাঁচিয়ে দেন। ৬৭ মিনিটের মাথায় জোয়াকিম লো নামান নব্রীকে। সাউথগেট নিয়ে আসেন জ্যাক গ্রিলিসকে। এই পরিবর্তনটাই ঘুরিয়ে দেয় ম্যাচ। ৭৫ মিনিটে রহিম স্টারলিং কেনকে বল বাড়ান, সেই বল গ্রিলিস হয়ে যায় লেফট ব্যাক লুকের পায়ে। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড তারকা মাইনাস করলে রহিম পা ছুঁয়ে গোল করেন।
এর কয়েক মিনিট পরেই অমার্জনীয় মিস করেন টমাস মুলার। সামনে একা গোলরক্ষককে পেয়ে বাইরে মারেন তিনি। ৮৬ মিনিটে ব্যবধান বাড়ান ইংল্যান্ড। এবারও বাঁদিক থেকে গ্রিলিস ক্রস করলে শরীর বেঁকিয়ে হেডে ২-০ করেন ইংলিশ অধিনায়ক। বাকি সময়টা জার্মানি চেষ্টা করেছিল। কিন্তু ইংলিশ মিডফিল্ডার রাইস এবং ফিলিপস দুর্দান্ত ব্লক করেন।
তুলনায় জার্মান মাঝমাঠের ক্রুস, গরেস্কা অনেক ম্রিয়মাণ ছিলেন। ইংল্যান্ডের দুই সেন্টার ব্যাঙ্ক স্টোন এবং মাগুইর এরিয়াল বলে বিশেষ সুবিধা করতে দেননি জার্মান ফুটবলারদের। পর্তুগাল ম্যাচ ঝড় তোলা রবিন গসেনস একেবারেই নিজের চেনা ছন্দে ছিলেন না। অসাধারণ ফুটবল উপহার দিলেন লুক শ। মাঠে ডেভিড বেকহ্যাম থেকে শুরু করে প্রিন্স উইলিয়াম এবং কেট উপস্থিত ছিলেন। সম্মানের ম্যাচে জার্মান ভূত ঘাড় থেকে নামল ইংরেজদের।