পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ধর্ষণের জন্য নারীদের পোশাক দায়ী- এমন মন্তব্য করে বেশ তোপের মুখে পড়েছিলেন। দেশ-বিদেশে তুমুল সমালোচনার মুখে মাসখানেক যেতে না যেতেই সুর বদলে ফেললেন তিনি। ইমরানের এবারের ভাষ্য, মেয়েরা যতই উত্তেজক পোশাক পরুক না কেন, ধর্ষণ হলে তার জন্য একমাত্র ধর্ষকই দায়ী। আজ বুধবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক গণমাধ্যম পিবিএস’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যে ধর্ষণ করে, সে এবং শুধু সেই ব্যক্তিই এর জন্য দায়ী। সুতরাং এ বিষয়ে পরিষ্কার হওয়া যাক। নারী যতই উত্তেজক হোক বা সে যে পোশাকই পরুক না কেন, যে ধর্ষণ করে শুধু সে-ই দায়ী। কখনোই ভুক্তভোগী দায়ী নয়। অথচ গত মাসেও ইমরান খানের বক্তব্য ছিল, নারীরা স্বল্পবসনা হয়ে চলাফেরা করলে পুরুষদের মন চঞ্চল হতে পারে। আর তা থেকে ধর্ষণের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে।
এইচবিও ম্যাক্সের একটি অনুষ্ঠানে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, পাকিস্তানে বাড়তে থাকা ধর্ষণ এবং যৌন হেনস্তার ঘটনায় নারীদের পোশাকের কোনো প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন কি না? জবাবে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী বলেন, কামনা বা বাসনা সংবরণ করার জন্যই পর্দাপ্রথার প্রচলন হয়েছে। তবে এই সংবরণের জন্য যে ইচ্ছাশক্তি দরকার, তা সবার নেই। তার কথায়, পুরুষেরা রোবট নয়। নারীরা স্বল্পবসনা হয়ে চলাফেরা করলে মন চঞ্চল হতেই পারে। এসব বলার মাস দুয়েক আগে আরও একবার ধর্ষণের জন্য নারীর পোশাককে দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছিলেন ইমরান খান। তার এসব মন্তব্যে পাকিস্তানে ক্ষোভপ্রকাশ করেন অনেকে।
এবার পিবিএস নিউজ আওয়ারে অংশ নিয়ে পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, কথার ছলে তিনি ওইসব বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন। তার কথায়, ওরা পাকিস্তানের সমাজ নিয়ে কথা বলছিল, যেখানে আমরা যৌন অপরাধ বৃদ্ধি পেতে দেখছি। আমি কখনোই এমন বোকার মতো কথা বলতে পারি না, যেখানে ধর্ষণের শিকার মানুষটাকে দায়ী করা হচ্ছে। এর জন্য সবসময় ধর্ষকই দায়ী। পাকিস্তানের সরকারি হিসাব অনুসারে, দেশটিতে প্রতিদিন অন্তত ১১টি ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। সেখানে গত ছয় বছরে ২২ হাজারের বেশি ধর্ষণমামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে সাজা হয়েছে মাত্র ৭৭ জন অভিযুক্তের।