তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জ্ঞান ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়তে গণমাধ্যমের ভূমিকাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করে বলেছেন, আগে টেলিভিশনের পরিচালনা কর্তৃপক্ষকে দেখা যেত ক্যাবল অপারেটরদের কাছে নানা ধরনের দেন-দরবার করতে, দ্বারে দ্বারে ঘুরতে, আমার সিরিয়ালটা একটু ওপরের দিকে দেন। আর ক্যাবল অপারেটররা কারোটা ওপরে তুলতো, কারোটা নামাতো। এই তোলা, নামানোর পিছনে নানাধরনের কাহিনী যুক্ত হতো। দায়িত্ব নেওয়ার পর শক্ত হাতে সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা টেলিভিশনের ক্রম ঠিক করে দিয়েছি। এখন সারা দেশে সে অনুযায়ী অর্থাৎ যে টেলিভিশন যখন থেকে সম্প্রচার শুরু হয়েছে সে অনুযায়ী তারা তালিকায় স্থান পেয়েছে। যারা আগে সম্প্রচার শুরু করেছে তাদের স্থান ওপরের দিকে থাকবে।
বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত বিএসআরএফ সংলাপে মন্ত্রী এ কথা বলেন।
বিএসআরএফ সভাপতি তপন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় প্রধান তথ্য অফিসার মো. শাহেনুর মিয়া এ সময় বক্তব্য রাখেন।
ড. হাছান বলেন, বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী টেলিভিশনগুলোকে ক্লিনফিড চালাতে হবে সে বিষয়ে দুবছর আগে থেকে তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। তাগাদা দেওয়ার পর বেশ কয়েকবার তাদের সাথে বসেছি। মাঝখানে করোনার কারণে আমরা খুব চাপ দিইনি। সর্বোপরি মাস দেড়েক আগে আমরা আবার বসেছিলাম, সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয়েছে পয়লা অক্টোবর থেকে আইনটি কার্যকর হবে। সেই সিদ্ধান্ত মোতাবেক ১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যে টেলিভিশন আমাদের দেশে তাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে চায় ক্লিনফিড পাঠানোর দায়িত্ব প্রথমত তাদেরই। তারা অন্যান্য দেশে বিজ্ঞাপনমুক্ত ফিড পাঠায়, আমাদের দেশে পাঠায় না। এখন তারা সেই উদ্যোগ নিয়েছে। যখন পাঠাবে তখন থেকে সম্প্রচার শুরু হবে। তার আগে আমি সময় দেওয়ার কোনো পক্ষপাতি নই। এটি হলে আমাদের পুরো গণমাধ্যম উপকার পাবে। খুব সহসাই এর উপকার আপনারা দেখতে পাবেন। গণমাধ্যমের সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই সাংবাদিক, কলাকুশলী, অভিনয়শিল্পী, অভিনয়ের সাথে যুক্ত লেখক সবাই এর সুফল পাবে।
ক্যাবল অপারেটিং থেকে আয় সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ জানান, দেশে সাড়ে ৩ থেকে ৪ কোটি টেলিভিশন গ্রাহক রয়েছে। তারা শহর অঞ্চলে প্রতিমাসে গ্রাহকপ্রতি চার থেকে পাঁচ শ টাকা আর সারা দেশে দেড় শ থেকে তিন শ টাকাও নেয়। গড়ে প্রতিমাসে গ্রাহকপ্রতি আড়াই শ টাকা করে নিলেও সাড়ে ৩ কোটি গ্রাহক থেকে ক্যাবল অপারেটররা কত টাকা পায়, সেটি সহজেই অনুমেয়। এখান থেকে কোনো ট্যাক্স-ভ্যাট সরকার পায় না। যে ক্যাবল অপারেটরের গ্রাহক ১ লাখ, তারা ঘোষণা করে ১ হাজার, যার গ্রাহক ১০ হাজার সে ঘোষণা করে ৫ শ। এখানে প্রচুর ফাঁকি দেয় তারা।
মন্ত্রী বলেন, তাদের এই ফাঁকিটাও আমরা বন্ধ করব। ১ নভেম্বর থেকে ঢাকা এবং চট্টগ্রামে ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটাল হতে হবে। এটা তারা মেনেই নিয়েছে। সেটি আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আবার স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। যখন ক্যাবল অপারেটিং সিস্টেম ডিজিটাল হবে, তখন এই ফাঁকি দেয়াটা সম্ভবপর হবে না।