চোখে ছিলো পানি, তবুও স্নিগ্ধ হাসি দিয়ে সহকর্মী ও উপজেলার সকলের কাছ থেকে বিদায় নিলেন ইউএনও হাসান মারুফ।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে গৌরীপুরের (ইউএনও)’র উপজেলা থেকে বিদায় বেলায় দেখা গেলো এমন বেদনাময় চিত্র। বিদায় কালে ইউএনও হাসান মারুফ বলেন, ভালো থাকুক গৌরীপুর উপজেলার প্রতিটি মানুষ। আমার কর্মজীবনে সেরা সঞ্চয় পেয়েছি আপনাদের ভালোবাসা। উপজেলায় কর্মরত অবস্থায় সহকর্মী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সব রকমের সহয়তা আমি পেয়েছি। কাজ আদায় করার জন্য হয়তো কারো বিরাগভাজন হয়েছি। অনেক সময় ইতিবাচক আবার কখনো নেতিবাচক ভাবে মানুষকে উপস্থাপন করা হয়। খোলা চোখ দিয়ে সবকিছু দেখা যায় না। চোখের আড়ালেও অনেক কিছু থাকে।
বিদায়বেলায় উপস্থিত বেশির ভাগ মানুষের চোখেই ছিলো জল। আবেগ থামাতে না পেরে কেঁদে ফেলেন অনেকেই। তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
জানা যায়, ২০২০ সালের ১০ আগস্ট এ উপজেলায় ইউএনও হিসেবে যোগদান করেন তিনি। এর আগে তিনি ঢাকা জেলায় সিনিয়র সহকারী কমিশনার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ৩৩ তম বিসিএস ক্যাডারের এ কর্মকর্তা হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে মাঠ প্রশাসনে যোগদান করেন।
বলা যায় তিনি কখনো নিজেকে সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে মনে করে কাজ করেননি। তিনি সকলকে নিজের আপন মানুষ ভেবে কাজ করেছেন এবং সেটা সবার চোখেও পড়েছে। প্রায় সপ্তাহ ব্যাপী উপজেলার সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান,মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, প্রেসক্লাব ও সাংবাদিকদের সংগঠন ও বিভিন্ন সমাজসেবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা ফুল ও ক্রেস্ট দিয়ে বিদায় সংবর্ধনা জানান হাসান মারুফকে।
যোগদান করার পর থেকেই সরকারি সেবা সর্বসাধারণের দুয়ারে পৌছিয়ে দিতে নিজেকে নিবেদন করেছেন। গত আড়াই বছরে তিনি তার কর্মের দ্বারা গৌরীপুরের সর্বস্তরের মানুষের মন জয় করেছেন। বিশেষ করে করোনা মহামারির ভীতিকর পরিস্থিতিতেও তিনি উপজেলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্ত পর্যন্ত ছুটে গেছেন সরকারি সাহায্য নিয়ে। বাড়িয়ে দিয়েছেন মানুষের প্রতি মানবিকতার হাত। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দরজা সত্যিকার অর্থেই উন্মুক্ত ছিলো সকলের জন্য। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর তৈরি করেছেন অতি সযতনে।ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের কাছে তিনি একজন সজ্জন, পরোপকারি ব্যক্তি হিসেবে অল্প সময়ে পেয়েছেন পরিচিতি। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করেছেন।