রাজধানীর পল্লবীতে ছেলের সামনে তার বাবা সাহিন উদ্দিনকে (৩৪) প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় আরো এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তার ওই আসামির নাম বাবু ওরফে কালা বাবু ওরফে কালু ওরফে শেখ রাসেল হোসেন (২৬)।
গতকাল বুধবার (২৬ মে) রাতে পল্লবী সিরামিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-৪ এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জিয়াউর রহমান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গ্রেপ্তার কালু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাহিন উদ্দীন হত্যায় নিজের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় হত্যা ছাড়াও চাঁদাবাজি, মারামারি ও মাদক মামলা রয়েছে। তাকে ইতোমধ্যে পল্লবী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এর আগে গত ২১ মে ভোরে ভৈরবে অভিযান মামলার প্রধান আসামি লক্ষ্মীপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ আউয়ালকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র্যাব-ডিবি পুলিশের অভিযানে এ পর্যন্ত সর্বমোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া র্যাব ও ডিবি পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন দুই আসামি।
গত ১৬ মে রাজধানীর পল্লবীর ১২ নম্বর ডি-ব্লক, ৩১ নম্বর রোডের ৩৬ নম্বর বাড়ির সামনে প্রকাশ্যে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। নিহত ওই ব্যক্তির নাম শাহিন উদ্দিন (৩৪)। তিনি পল্লবীর ১২ নম্বর সিরামিক রোডের বাসিন্দা।
মাশরাফি নামে ৭ বছরের একটি ছেলে রয়েছে নিহত শাহিন উদ্দিনের। ঘটনার সময় সে তার বাবার সঙ্গে ছিল। মাশরাফি জানিয়েছিল, বিকেলে সে তার বাবার সঙ্গে মোটরসাইকেলে ঘুরছিল। এ সময় সুমন নামের এক যুবক তার বাবাকে ফোন করে ৩১ নম্বর রোডে দেখা করার কথা বলে। সেখানে পৌঁছলে তাকে (মাশরাফি) মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে তার বাবার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ায় সুমন। এরপর তার চোখের সামনেই তার বাবাকে লাথি মেরে মোটরসাইকেল থেকে ফেলে দেয় সুমনসহ ৬-৭ জন। এরপর তারা মাশরাফির বাবাকে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। বাঁচার জন্য নিহত ওই ব্যক্তি পাশের একটি বাড়ির গ্যারেজে আশ্রয় নিলে সন্ত্রাসীরা সেখানে ঢুকে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি, জমি-জমাসংক্রান্ত বিরোধের জেরেই সুমন বাহিনী এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। কিছুদিন আগেও সুমন বাহিনী নিহত ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করে। ওই ঘটনায় ওই সময় পল্লবী থানায় মামলা হয়।
স্থানীয়রা জানায়, সুমন স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ব্যাটারিচালিত রিকশার টোকেন বাণিজ্য, মাদক ও জুয়া খেলাসহ নানা অপকর্মে জড়িত সুমন বাহিনী। গত এক মাসের ব্যবধানে সুমন বাহিনীর বিরুদ্ধে পল্লবী থানায় চারটি মামলা হয়েছে। পল্লবীর বহুল আলোচিত যুবলীগ নেতা আড্ডুর ছত্রচ্ছয়ায় দিনে দিনে বেপরোয়া গতিতে চলছে সুমন বাহিনী।