ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই উত্তেজনার পারদ একদম উপরে। সেই উত্তেজনাকে তুড়ি মেরে দূর্দান্ত জয় তুলে নিলো পাকিস্তান। বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের রেকর্ড গড়া জুটিতে টি-২০ বিশ্বকাপের গ্রুপ বি এর প্রথম ম্যাচে ভারতকে ১০ উইকেটে হারানোর লজ্জায় ফেললো বাবর-রিজওয়ানরা। এই ম্যাচ জিতে পাকিস্তানের আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে।
১৫২ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই ভারতীয় টপ ক্লাস বোলারদের ওপর চড়াও হয় পাকিস্তানি দুই ওপেনার বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। সেই ধারা অক্ষুণ্ণ রেখে ১৩ বল আগেই জয় তুলে নিয়ে মাঠ ছাড়ে তারা। বাবর ৫২ বলে ৬৮ ও রিজওয়ান ৫৫ বলে ৭৯ রান করে অপরাজিত থাকেন।
শুধু ম্যাচ জিতিয়েই ক্ষ্রান্ত হননি তারা, গড়েছেন রেকর্ডও। তাদের এই অপরাজিত পার্টনারশিপ প্রথম উইকেট জুটির ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ক্রিস গেইল ও ডুইন স্মিথের ১৪৫ রানের পার্টনারশিপকে টপকে গেছেন এই দুই পাকিস্তানি। এছাড়াও যে কোনো উইকেট জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এই রেকর্ড।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই ৫বার মুখোমুখি হয়েছিল ভারত-পাকিস্তান। প্রতিবারই জয়ী দলটির নাম ভারত। কিন্তু সেই রেকর্ড ভেঙ্গে মধুর প্রতিশোধ নিলো পাকিস্তানিরা।
দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ভারতকেই ব্যাট করার আমন্ত্রণ জানান পাকিস্তান অধিনায়ক। ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পেসার শাহনি শাহ আফ্রিদির আগুনে বোলিংয়ের মুখে পড়েন ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা।
ইনিংসের প্রথম ওভারেই বিধ্বংসী রোহিত শর্মাকে এলবিডব্লিউ করে সাজঘরের পথ দেখিয়ে দেন শাহিন আফ্রিদি। কোনো রান না করেই ফিরে যান রোহিত।
তৃতীয় ওভারে বল করতে এসে প্রথম বলেই ফিরিয়ে দেন লোকেশ রাহুলকে। আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের হয়ে বিধ্বংসী সূচনা করে থাকেন রাহুল। কিন্তু এবার তিনি আউট হয়ে গেলেন ৮ বলে মাত্র ৩ রান করে। আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে ফিরে যান তিনি।
এরপর বিরাট কোহলি এবং সুর্যকুমার যাদব মিলে জুটি গড়েন। তাদের এই জুটি ২৫ রান করার পর ভেঙে যায় পাকিস্তানি উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের দুর্দান্ত এক ক্যাচের কারণে। বোলার ছিলেন হাসান আলি। তার ডেলিভারিটিও ছিল দেখার মত। ৮ বলে ১১ রান করে ফিরে যান সুর্যকুমার।
এরপরই রিশাভ পান্তকে নিয়ে জুটি গড়েন বিরাট কোহলি। দু’জনের ব্যাট গড়ে ওঠে ৫৩ রানের জুটি। শাদাব খানের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে পান্ত যখন ফেরেন তখন তার রান ৩০ বলে ৩৯।
এরপর মাঠে নামেন রবিন্দ্র জাদেজা। কোহলির সঙ্গে জুটি গড়ে করেন ৪১ রান। এর মধ্যে জাদেজার অবদান ১৩ বলে ১৩ রান। তিনি আউট হন হাসান আলির বলে মোহাম্মদ নওয়াজের হাতে ক্যাচ দিয়ে।
এরই মধ্যে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করে ফেলেন বিরাট কোহলি। শেষ পর্যন্ত শাহিন শাহ আফ্রিদির স্লোয়ার বাউন্সারেই কুপোকাত হলেন তিনি। ক্যাচ দিলেন উইকেটের পেছনে মোহাম্মদম রিজওয়ানের হাতে। সে সঙ্গে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চতুর্থবার এসে পাকিস্তানের বিপক্ষে আউট হলেন কোহলি।
হার্দিক পান্ডিয়া করেন ৮ বলে ১১ রান। তিনি আউট হন হারিস রউফের বলে বাবর আজমের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ভুবনেশ্বর কুমার থাকেন ৫ রানে অপরাজিত।
শাহিন শাহ আফ্রিদি নেন ৩ উইকেট। হাসান আলি ২টি, ১টি করে উইকেট নেন শাদাব খান এবং হারিস রউফ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারতঃ ১৫১/৭ (ওভার ২০)
কোহলি ৫৭, পান্ত ৩৯;
আফ্রিদি ৩/৩১, হাসান ২/৪৪)
পাকিস্তানঃ ১৫২/০ (ওভার ১৭.৫)
রিজওয়ান ৭৯*, বাবর ৬৮*