সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত এবারের আইসিসি আসরে দূর্দান্ত সূচনা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট দল। নিউজিল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টানা দুই ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালে এক পা দিয়ে রেখেছে তারা। উত্তেজনাকর ম্যাচে কিউইদের উইকেটে হারায় তারা।
নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে কিউইদের বিপক্ষে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দলপতি বাবর আজম। তবে আগের ম্যাচে ভারতকে শুরুতেই গুঁড়িয়ে দেয়া শাহীন আফ্রিদি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে উইকেট না পেলেও আঁটসাঁট বোলিংয়ে চেপে ধরেছিলেন ঠিকই। প্রথম ওভারেই মেডেন। হারিস রউফ হয়ে উঠলেন আরও ভয়ঙ্কর। একই সঙ্গে মোহাম্মদ হাফিজ-ইমাদ ওয়াসমিরা জ্বলে ওঠায় কিউইদের রানের চাকা বেশি দূর যায়নি। পাকিস্তানের দুর্দান্ত বোলিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৩৪ রান করতে পেরেছে নিউজিল্যান্ড।
আরব আমিরাতের শারজাহ স্টেডিয়ামে ফর্মে থাকা পাকিস্তান বোলারদের সামনে সুবিধা করতে পারেনি কিউই ব্যাটাররা। উদ্বোধনী জুটিতে ৩৬ রান এসেছে, তবে সংগ্রাম করেছেন দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ড্যারেল মিচেল। গাপটিল ২০ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ১৭ রান করে ফেরেন প্যাভিলিয়নে। মিচেল কিছুটা হাত খুলতে পেরেছিলেন। ইমাদ ওয়াসিমের বলে ফেরার আগে ২০ বলে ১ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায় খেলে যান ২৭ রানের ইনিংস।
ব্যাটিং অর্ডারের বদলে প্রমোশন পেয়ে চারে নামেন জিমি নিশাম। তবে কিউইদের ‘বাজি’ কাজে আসেনি। মাত্র ১ রান করে তার বিদায়। পরের সময়টা প্রতিরোধ গড়েছিলেন কেন উইলিয়ামসন ও ডেভন কনওয়ে। যদিও খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। উইলিয়ামসন দুঃখজনক রান আউটে ফেরেন ২৫ রানে। ২৬ বলের ইনিংসে ২ চারের সঙ্গে এক ছক্কার মার। কনওয়ে ২৪ বলে ৩ বাউন্ডারিতে করেন ২৭ রান।
এরপর গ্লেন ফিলিপস (১৫ বলে ১৩), টিম সেইফার্ট (৮ বলে ৮) ও মিচেল স্যান্টনারের (৫ বলে ৬) ব্যর্থতায় ৮ উইকেটে ১৩৪ রানে থামে কিউইরা।
পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার রউফ। এই পেসার ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। শাহীন ৪ ওভারে ২১ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। তার মতো একটি করে উইকেট শিকার ইমাদ ও হাফিজের।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে দেখেশুনেই খেলতে থাকেন আগের ম্যাচের অপরাজিত জুটি বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ান। কিউই ভেরিয়েশন সমৃদ্ধ বোলারদের বুদ্ধিদীপ্ত শটেই সামলাচ্ছিলেন তারা।
কিন্তু ৫ম ওভারে এসে দলপতি বাবর আজমকে বোল্ড করে প্যাভিলিয়নে ফেরান কিউই পেসার টিম সাউদি। ১১ বলে ৯ রান করে ফেরেন বাবর। এরপরে ব্যাটিংয়ে নামেন ফখর জামান। কিন্তু নেমেই মন্থর ব্যাটিং করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৭ বলে ১১ রান করে ফিরেন ফখর। তবে একপ্রান্ত ঠিকই আগলে রেখেছিলেন ওপেনার রিজওয়ান। ফখর আউট হলে ব্যাটিংয়ে নামেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ হাফিজ। নেমেই প্রথম বলে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফিজ জানান দেন, বুড়ো হলেও ফুরিয়ে যাননি তিনি।
হাফিজ-রিজওয়ান জুটিতে নতুন আশা বাঁধে পাকিস্তানিরা। কিন্তু সে আশা সফল হয়নি। স্যান্টনারের বলে সজোরে হাঁকানো শটে অবিশ্বাস্য ক্যাচ ধরেন ডেভন কনওয়ে। ৬ বলে ১১ রান করে ফেরেন হাফিজ। এরপরে নামেন আরেক সিনিয়র ক্রিকেটার শোয়েব মালিক। কিন্তু ৩৪ বলে ৩৩ রান করে এবার আউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন রিজওয়ান। ব্যাটিংয়ে নামা ইমাদ ওয়াসিমও ১২ বলে ১১ রান করে আউট হয়ে গেলে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান।
কিন্তু পাকিস্তানিদের ত্রাণকর্তা হিসেবে যেন মাঠে নামেন আসিফ আলী। ১৭ তম ওভারে সাউদির দুই বলে দুই ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ট্র্যাকে ফেরান আসিফ। এরপরে রানের মিছিলে যোগ দেন মালিকও। শেষ অব্দি ১৮.৪ ওভারে ৫ উইকেটের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান। শোয়েব মালিক ২০ বলে ২৬ ও আসিফ আলী অপরাজিত থাকেন ১২ বলে ২৭ রানে।
দূর্দান্ত বোলিংয়ে ম্যাচসেরা হন হারিস রউফ।