বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ‘জাপান-বাংলাদেশ-সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ সূচনা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশ এবং জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) মধ্যে সহযোগিতার ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানে প্রচারিত ভিডিও বার্তায় বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে একটি নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে আমরা ‘জাপান-বাংলাদেশ সমন্বিত অংশীদারিত্ব’ সূচনা করেছি। আমাদের সমন্বিত অংশীদারিত্ব অদূর ভবিষ্যতে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হতে চলেছে।
মুক্তিযুদ্ধের সময় জাপান ও সে দেশের জনগণের সমর্থন ও অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে আন্তরিকতা, বন্ধুত্ব এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধা দীর্ঘস্থায়ী দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের মূল মূল্যবোধ। বাংলাদেশ ও জাপান সেই মূল্যবোধ ও অভিন্ন স্বার্থের ভিত্তিতে সম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে চলেছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে তার প্রথম টোকিও সফরের মাধ্যমে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত্তি স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী ১৯৯২, ১৯৯৭, ২০১০, ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৯ সালে জাপানে তার নিজের সফরের পাশাপাশি দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করতে ২০১৪ সালে জাপানের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের বাংলাদেশ সফরের কথাও স্মরণ করেন।
বাংলাদেশের উন্নয়নে জাইকার অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ জাপানকে তার সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু এবং একক বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭১-৭২ অর্থবছরে ১০ দশমিক ৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য অনুদান সহায়তা থেকে শুরু করে বাংলাদেশে জাইকার আর্থিক সহায়তার মোট পরিমাণ এখন ২৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ লক্ষ্যে জাইকার সহায়তায় মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প, যমুনা নদীর ওপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রেলসেতু, ঢাকায় মেট্রোরেল নেটওয়ার্ক এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্প্রসারণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশে পরিণত করতে জাতির পিতার স্বপ্ন পূরণে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর ইতোমধ্যে এটি ২০২৬ সালে একটি উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি পেয়েছে।’
বাংলাদেশ-জাইকার সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে শেখ হাসিনা জাপানের সম্রাট ও সম্রাজ্ঞীকে তার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান এবং সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী এবং জাপানের বন্ধুত্বপূর্ণ জনগণের প্রতি গভীর শুভেচ্ছা ও আন্তরিক অভিনন্দন জানান।